কবি প্রাণের আকুলতা

মহিম চক্রবর্তী অন্তু

বুকের ভেতরে উত্তাল সমুদ্রের মতো বয়ে যাওয়া

এমন অনুভূতির অনুযোগটুকু

যদি কেউ বুঝতো!

যদি ছলছল আঁখির দিকে তাকিয়ে

ভালোবাসার তৃষ্ণা মেটাতে পারতো কেউ।

যদি এক নিমিষেই পড়ে ফেলতে পারতো

চোখের জলের আকুলতা,

তবে হয়তো কবি-প্রাণ অমর হতো।

কবিরা কল্পনায় কবিতার সাথে সংসার করে। খুব অপরিচিত মানুষটাও,

একদিন হঠাৎই স্বপ্নে এসে প্রিয়তমের মতো আচরণ করে,

অধিকার খাটায়।

হাতের ইশারাতে কাছে ডাকে, অনুভবে ছুঁয়ে যায়,

তবু হাত বাড়ালে সে আর নেই।

মনেহয় নিশীথের অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো সে…

একটা আটপৌরে মানুষের খোঁজ করতে, করতে

এই মধুর জীবন পার হয়ে যায়।

শেষ বয়সে এসে মনে পড়ে যায়,

আর কি কখনো হবে এমন মানব জন্ম!

কবি শামসুর রাহমান

না পাওয়ার তৃষ্ণা নিয়ে চলে যায় চিরতরে।

আহারে, কি অসহ্য সুন্দর এই ব্যাথাটা।

এই মোম জোছনায়, বিবাগী মনটা কেমন যেন উতলা হয়ে উঠলো,

কিছু একটা না থাকার অনুভবে

বুকের বাঁ পাশটায় শূণ্যতার বীণা বেজে উঠলো।

জানালার বাইরের, এই অনিন্দ্য চাঁদের আলোতে

গা ভাসানোর মতো কেউ নেই।

এই চোখের জলে ভেজার মতো কেউ নেই..!

কবি মনের আকুলতা বুঝার মতো কেউ নেই,

কোথাও কেউ নেই, কিচ্ছু নেই।

শুধুই অন্ধকারের তপোবনে হেঁটে হেঁটে চলে যায় কবি,

শ্রান্ত মনে, শ্রাবণের পূর্ণিমায়।

তাই বোধহয় জীবনের শেষ দিনগুলোতে,

এমন শূণ্যতা বোধে ভরে উঠেছিল, শামসুর রাহমানের হৃদয়।

তিনি বলেছেন-

“আমি যাচ্ছি চলে,

কোনদিন হয়তো আর আসবো না!

তবে যেটুকু নিয়ে গেলাম, তাঁর প্রতিদান আমি দিতে পারবো না!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *